Friday

আইনি সব সুযোগই পেয়েছিলেন কাদের মোল্লা


যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে পাকিস্তান পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ এবং তার প্রতিবাদে দেশজুড়ে প্রতিবাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন।অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “আমরা আশা করি, পাকিস্তানে যারা মৌলবাদীদের পক্ষ নিয়েছে, সেখানকার নতুন প্রজন্ম তাদেরকে রুখে দাঁড়াবে।”গত ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান রাজপথে নেমে এর প্রতিবাদ জানায়। বিচার প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলে তারা।মাহবুবে আলম বলেন, “যারা আমাদের এই বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করেছে। তারা না জেনে মন্তব্য করেছে। আমাদের উচ্চ আদালতের প্রতিটি রায় আন্তর্জাতিক মানের।”“তারা জানেন না, এই মামলাটি ট্রাইব্যুনালে মোট ৯ মাস ১২ দিন ধরে শুনানি হয়, যার মধ্যে ৮৫ কার্যদিবস শুনানির জন্য ধার্য করা হয়। এর মধ্যে ৩০ কার্যদিবস আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি হতে পারেনি।”“ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আপিল বিভাগে প্রায় ১ মাস শুনানি হয়েছে। এরপর রায় দেয়া হয়েছে। পরে দণ্ড কার্যকরের প্রাক্কালে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারক দণ্ড কার্যকরের স্থগিত করেন। তাদের দায়ের করা রিভিউ পিটিশন, সেটা শুনানির সুযোগও তাদের দেয়া হয়।”“কাজেই আইনি সব প্রক্রিয়ার সুবিধা এই আসামি পেয়েছে। সব সুবিধা প্রদানের পরই এই দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কাজেই এ সম্বন্ধে নানা উচ্চপদে থাকা অবস্থায় যারা নানা রকম বক্তব্য দিচ্ছেন, যেটা আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য,” বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধান আইন এবং আইনের অধীনে রুলস সম্পর্কে না জেনে কোনো বক্তব্য দেয়াটা ঠিক না। যারা দিচ্ছেন, তারা আমাদের বিচার বিভাগকে অবমাননা করছেন।“আমাদের বিচার বিভাগ অতি শক্তিশালী, আমাদের বিচার বিভাগের মান বিশ্ব মানের, এটা আমাদের বিচার বিভাগের উপর অযাচিত হস্তক্ষেপের শামিল। এটা আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ।”


‘প্রমাণ হয়েছে, কাদের মোল্লা যুদ্ধাপরাধী’মাহবুবে আলম বলেন, পাকিস্তানের সংসদে যে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণ অন্যায়, অগ্রহণযোগ্য, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও কূটনৈতিক শিষ্টাচারের লঙ্ঘন।“বাংলাদেশের প্রতি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের যে বিরূপ মনোভাব ছিল, যে আগ্রাসী হিংস্র মনোভাব কোনোভাবে এখনো পাল্টায়নি বলে মনে হচ্ছে। তাদের হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাদের প্রস্তাবে।”“এই প্রস্তাব দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, কাদের মোল্লা তাদের দোসর এবং কাদের মোল্লার আসলেই একজন যুদ্ধাপরাধী।”“অনেকেই বলছে, এই কাদের মোল্লা সেই কসাই কাদের মোল্লা না। বিচারের সময় কাদের মোল্লা ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়েছেন। তিনি নিজে দাবি করেননি যে তিনি কসাই কাদের না।”‘আন্তর্জাতিক ফোরামে যাওয়া সরকারের বিষয়’কাদের মোল্লা ও যুদ্ধাপরাধী ইস্যুতে বাংলাদেশ কোনো আন্তর্জাতিক ফোরামে যাবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এটা সরকারের বিষয়। ইতিমধ্যেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে, দ্ব্যর্থহীন ভাষায়, জোরালো কণ্ঠে তাদের এই কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এ বিষয়ে বলেছেন। কাজেই সরকার নিশ্চই এ বিষয়টি বিবেচনা করছেন।”“আমরাও এখানে এই দেশের নাগরিক হিসাবে এবং এই দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা হিসাবে তাদের এই প্রস্তাবের নিন্দা করছি,” বলেন তিনি।