Thursday

সুবিধাবাদী ফালুকে খালেদার কঠোর সর্তকবার্তা !

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুর ‘সুবিধাবাদীতার রাজনীতি’ নিয়ে এবার খালেদা জিয়াও ‘ক্ষুব্দ’! দলের ‘সংকটময় মুহুর্তে’ আন্দোলন, সংগ্রামে ফালুর উপস্থিতি না থাকা ও মহাজোট সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যোগাযোগ, ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় খালেদা জিয়া সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে উপস্থিতদের কাছে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে এ বিষয়ে ফালুকে তিনি ‘কঠোর সর্তকবার্তা’ও দেন। এর আগে স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য ফালুর ‘আন্দোলন বিমুখ থাকা, শেয়ার বাজার কেলেংকারি’ ইত্যাদি বিষয়ে খালেদা জিয়ার কাছে অভিযোগ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিন সদস্য প্রিয় দেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তথ্যমতে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ২০১১ সাল থেকে আন্দোলন করছে বিএনপি। গত ২৫ অক্টোবর সংসদের মেয়াদ শেষ হবে, এমনটি ধরে নিয়ে আন্দোলন জোরদার করে দলটি। এরপর গত ২৭, ২৮, ২৯ অক্টোবর আর ৪, ৫ ও ৬ নভেম্বর হরতাল ডাকা হয়। সবশেষ ছয় দিনের হরতালসহ আগের কোনো আন্দোলন, কর্মসূচিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা ফালুকে মাঠে দেখেননি। মহাজোট সরকারের গত পৌনে পাঁচ বছরে ফালুকে রাজপথে দেখা যায়নি। দলের কোনো আন্দোলন, কর্মসূচিতেও অংশ নেননি তিনি। দলের কার্যালয়েও তিনি যান মাঝে মধ্যে। শীর্ষ নেতারা বিষয়টি ফের খালেদা জিয়ার কাছে অভিযোগ আকারে তুলে ধরেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য প্রিয় দেশকে বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক হবে। এতে ফালুসহ দলের আন্দোলন বিমুখ নেতাদের বিষয়ে চেয়ারপারসনের সঙ্গে আলোচনা হবে। এছাড়া দলের পরবর্তী কর্মসূচি, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য প্রিয় দেশকে বলেন, ‘ফালুর সুবিধাবাদীতার রাজনীতির বিষয়টি নতুন নয়। এটা খালেদা জিয়া জানেন। তিনি তাকে হঠাৎ করে কঠোর সর্তকবার্তা দিয়েছেন, এটা সত্য নয়। ফালুর জন্য দল প্রচুর বদনাম কুঁড়িয়েছে। তাকে বিতর্কিত উপনির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ সদস্যও বানানো হয়েছে। এত সবের পর এখনো ফালু দলে প্রভাবশালী। তার ক্ষমতার উৎস সবার জানা।’

বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, সাবেক সংসদ সদস্য মোসাদ্দেক আলী ক্ষমতায় থাকতে যতটা সক্রিয় ছিলেন, বিএনপি বিরোধী দলে যাওয়ার পর থেকে তিনি যেন ততটাই নিষ্ক্রিয়। গত চার দলের জোট সরকারের আমলে তাকে এনটিভি, আরটিভির অনুমতি দিয়ে সরকারকে সমালোচনার শিকার হতে হয়। ওই এনটিভি এখন পুরোপুরি ‘আওয়ামী ঘরানার’ চ্যানেল। দলের জন্য কোনো প্রচারণা চালাচ্ছে না এনটিভি। এসব কারণে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও ফালুর উপর ক্ষুব্ধ। খালেদা জিয়া হজ্জ পালন করতে গেলে তার পাশে টিভি পর্দায় দেখা যায় ফালুকে। এছাড়া বছরের অন্য সময় তার মুখটাও দেখেন না বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপি রাজনৈতিক ‘বিপদ’, দলটির নেতাকর্মীরা ‘গ্রেফতার, মামলা’ মোকাবিলা করলেও ফালু বেশ বহাল তবিয়তে আছেন মহাজোট সরকারের আমলে। ব্যবসা করে যাচ্ছেন মহাজোটের মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে। এ সরকারের আমলের আলোচিত শেয়ার বাজার কেলেংকারির ঘটনাতে উঠে আসে ফালুর নাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি নিয়ে এক পর্যায়ে জাতীয় সংসদে বলেন, ‘ফালুকে ধরলেই শেয়ারবাজার কেলেংকারির টাকা পাওয়া যাবে।’