Thursday

গ্রামীণ ব্যাংককে রক্ষা করবে এমন লোককে ক্ষমতায় আনতে হবে: ড. ইউনূস


শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে যারা গ্রামীণ ব্যাংক আইনকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার জন্য এগিয়ে আসবে, দেশবাসীকে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে, পরবর্তী নির্বাচনে তাদেরকেই নির্বাচিত করতে হবে। এছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ নেই। তাই আমি আবেদন রাখছি, ভবিষ্যতে এমন সরকারকেই ক্ষমতায় আনতে হবে, যাতে এই ব্যাংক রক্ষা করা যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে পঞ্চম বিশ্ব সামাজিক ব্যবসা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংক আইনের সর্বশেষ সংশোধনীর ফলে ব্যাংকটি ধ্বংসের পর্ব শুরু হলো মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে কার্যত গরিবের কাছ থেকে ব্যাংকটি কেড়ে নেয়ার প্রক্রিয়াই শুরু হয়েছে।এরআগে কুয়ালালামপুরের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দে শুরু হয় তিনদিনব্যাপী 'গ্লোবাল সোশ্যাল বিজনেস সামিট ২০১৩'। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস ছাড়াও বক্তব্য দেন বাহরাইনের সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ড. ফাতিমা আল বালুশি, ইউনূস সোশ্যাল বিজনেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাসকিয়া ব্রাইস্টেন, মালয়েশিয়া ভিত্তিক ইউথ ট্রাস্ট ফাউন্ডেশন মাই হারাপানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুরফারিনি দাইয়ং, সোশ্যাল বিজনেস সামিটের প্রধান ও গ্রামীণ ক্রিয়েটিভ ল্যাবের প্রধান হানস রেইটজ প্রমুখ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্র্যানসন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বজুড়ে সামাজিক ব্যবসার বিকাশ ঘটানোর মাধ্যমে দুনিয়াকে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্ত করার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অন্যদেরকে সুখী করার মধ্যে রয়েছে প্রকৃত সুখানুভূতি। আর অন্যকে সুখী করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে সামাজিক ব্যবসা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান সামাজিক ব্যবসায় উল্লেখযোগ্যভাবে যুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে আলবেনিয়া ও হাইতির সরকার দারুণভাবে উদ্যোগী হয়েছে।এবারের সম্মেলনে বিশ্বের অন্তত ৪০টি দেশ থেকে সবমিলিয়ে সাড়ে পাঁচ শতাধিক ডেলিগেট অংশগ্রহণ করছেন। এরমধ্যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৫৫ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রোকেয়া আফজাল রহমান, বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, সিনিয়র সাংবাদিক ও মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল প্রমুখ।সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আইন সংশোধনের ফলে ৮৫ লাখ মানুষের প্রতিষ্ঠানটি এখন চলবে ব্যক্তি বিশেষের ইচ্ছায়। অথচ গ্রামীণ অধ্যাদেশ তৈরিই করা হয়েছিল এমনভাবে, যাতে প্রতিষ্ঠানটির ওপর কোনো সরকারি হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকবে না।